পর্ব-২: বিষয় কোষ ও টিস্যু ভাইবা প্রস্তুতি ( প্রাণিবিদ্যা)
কোষ কী?
জীবদেহের গঠন ও কাজের একককে কোষ বলে।
জীবকোষর প্রকারভেদ:
নিউক্লিয়াসের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ভিত্তিতে কোষকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
আদি কোষ ও প্রকৃত কোষ।
আদি কোষের নিউক্লিয়াস কোন আবরণী দ্বারা আবদ্ধ নয়। যেমন- ব্যাকটেরিয়া।
প্রকৃত কোষের নিউক্লিয়াসে আবরণ থাকে।
প্রকৃত কোষকে তাদের কাজের ভিত্তিতে দু‘ভাগে ভাগ করা হয় । যথা- দেহকোষ ও জননকোষ।
দেহকোষ দেহের গঠন ও বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করে। এসব কোষ বিভাজনের কারণে জীবদেহ বৃদ্ধি পায়। জননকোষের কাজ হলো জীবের প্রজননে অংশ নেওয়া।
জীবদেহে বিভিন্ন আকার আকৃতির কোষ দেখা যায়, যেমন- গোলাকার, ডিম্বাকার, আয়তাকার ইত্যাদি।
সাধারণত কোষ এতই ক্ষুদ্র যে খালি চোখে দেখা যায় না।
প্রোটোপ্লাজম: কোষপ্রাচীরের অভ্যন্তরে পাতলা পর্দাবেষ্টিত জেলীর ন্যায় থকথকে আধা তরল বস্তুটিকে প্রোটেপ্লাজম বলে। এক জীবনের ভিত্তি বলা হয়। এর তিনটি অংশ যথা- কোষ ঝিল্লি, সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস।
কোষঝিল্লি বা সেল মেমব্রেন বা প্লাজমা মেমব্রেন: সম্পূর্ণ প্রোটোপ্লাজমকে ঘিরে যে নরম পর্দা দেখা যায় তাকে প্লাজমামেবব্রেন বলে। এটি কোষের ভেতর ও বাইরের মধ্যে খনিজ পদার্থ ও গ্যাস এর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
সাইটোপ্লাজম: প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াসকে বাদ দিলে যে অর্ধতরল অংশটি থাকে, তাকে সাইটোপ্লাজম বলে। এর প্রধান কাজ কোষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঙ্গানুগুলোকে ধারণ করা।
টিস্যু: অনেকগুলো কোষ যখন কোন নির্দিষ্ট কাজ করে তথন ঐ কোষগুলোকে একত্রে টিস্যু বলে। টিস্যু সাধারণত চার ধরনের হয়।যথা-
ক. আবরণী টিস্যু
খ. যোজক টিস্যু
গ. পেশী টিস্যু
ঘ. স্নায়ু টিস্যু
ক. আবরণী বা এপিথিলিয়াল টিস্যূ
যে টিস্যু দেহের খোলা অংশ ঢেকে রাখে এবং দেহের ভিতরের আবরণ তৈরি করে তাকে আবরণী টিস্যূ বলে। আমাদের ত্বকের বাইরের আবরণ, মুখগহ্বরের ভিতরের আবরণ আবরণী টিস্যূ দিয়ে গঠিত।দেহের বিভিন্ন গ্রন্থিগুলোও আবরণী টিস্যু দিয়ে তৈরী।
আবরণী টিস্যুর বৈশিষ্ট্য:
১) আবরণী টিস্যু গুলো এক বা একাধিক স্তরে সাজানো থাকে।
২) কোষগুলো পাতলা ভিত্তি পর্দার উপর সাজানো থাকে।
৩) এ ধরনের কলাতে কোন অন্তঃ কোষীয় ধাত্র (Matrix)
থাকে না।
কাজ: এ টিস্যু দেহের ভিতরের ও বাইরের অঙ্গগুলোকে আঘাত থেকে রক্ষা করে। পাকস্থলী ও অন্ত্রের আবরণী কলা পাচক রস ক্ষরণ করে।
খ. যোজক টিস্যু: যোজক টিস্যু বিভিন্ন প্রাণীদেহের টিস্যু এবং অঙ্গের মধ্যে সংযোগ সাধন করে।
এ টিস্যু প্রধানত কঠিন তরল ও মেদময় হয়।যেমন রক্ত, হাড়, তরুণাস্থি, মেদময় কলা।
যোজক কলার কাজ :
হাড় গঠনের প্রধান উপাদান ক্যালশিয়াম।
হাড় দেহের কাঠামো গঠন করে, দেহের ভার বহন করে ও দৃঢ়তা দান করে। পেশী বন্ধনী বা টেন্ডন পেশীকে হাড়ের সাথে যুক্ত করে। মেদকলা স্নেহ পদার্থ সঞ্চিত রাখে। তন্তুময় যোজক টিস্যু ফুসফুস ও রক্তনালীর প্রাচীর সংকোচন ও প্রসারণে সাহায্য করে।
তরুনাস্থী হাড়ের চেয়ে নরম ও অন্যান্য টিস্যুর চেয়ে বেশি চাপ ও টান সহ্য করতে পারে। যেমন নাক ও কানের তরুণাস্থি।
রক্ত বিভিন্ন দ্রবাদি ( খাদ্য, অক্সিজেন, রেচন পদার্থ ) দেহের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন করে। এছাড়া রক্ত রোগজীবাণু প্রতিরোধ করে। রক্ত তরল যোজক কলা।
গ. পেশি টিস্যু ( মাসকুলার টিস্যু)
দেহের কোন কোন পেশী আমরা ইচ্ছামত নড়াচড়া করতে পারি।যেমন হাত বা পায়ের পেশী। আবার কোন কোন পেশী আমরা ইচ্ছামত নড়াচড়া করতে পারি না। যেমন, পাকস্থলীর পেশী।
ঘ. স্নায়ু টিস্যু বা নার্ভ টিস্যু:
প্রাণিদেহের যে টিস্যু উদ্দিপনায় সাড়া দিয়ে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করতে পারে
তাকে স্নায়ুটিস্যু বলে। স্নায়ু কোষের একক হলো নিউরন।
প্রতিটি নিউরন তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা:
১) কোষদেহ ২) ডেনড্রন ৩) অ্যাক্সন
No comments