Header Ads

Header ADS

বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ( Alexander Fleming)

 বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং 

একজন চিকিৎসক। তার নাম আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। রোগ জীবাণুদের প্রতিপালন করা এবং ওদের নিয়ে গবেষণা করার বড্ড শখ ছিল ডাক্তারের। একদিন যে কাঁচের বাক্সের ভেতরে রোগজীবাণুদের রেখেছিলেন, সেই বাক্সের ঢাকনা খুলে চোখে পড়লো বাক্সের ভিতরে কেমন করে যেন হঠাৎ গজিয়ে উঠেছে এক ধরনের ছত্রাক। ঐ ছত্রাকের ধারে কাছে রোগজীবাণুরা আদৌ বংশবিস্তার করতে পারে নি, বরং অনেকেই একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে।

কারণ অনুসন্ধানে যত্মবান হলেন ফ্লেমিং। একদিন বুঝতে পারলেন, বাক্সের ঢাকনা খুলে যখন তিনি রোগজীবাণুদের বপন করতেন, তখনই কোন এক অসতর্ক মুহূর্তে বিশেষ এক ধরনের বিরল প্রজাতির   

ছত্রাকের বীজ বাতাস থেকে উড়ে এসে বাক্সে পড়েছে এবং অনুকূল পরিবেশ লাভ করে বংশবিস্তার করেছে।

ব্যাপারটা অতি সাধারণ হলে কী হবে ফ্লেমিং ঘটনাটিকে আদৌ তুচ্ছ মনে করলেন না। এ সম্বন্ধে তিনি মাথা ঘামাতে শুরু করলেন এবং তিনি ধারণা করলেন অজ্ঞাত এই ছত্রাকটির নিশ্চয় এই জীবণুদের ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে। ছত্রাকটি নিয়ে এবার শুরু হলো গবেষণা। অচিরেই জানতে পারলেন, ছত্রাকটি বিরল হলেও এদের বীজ বাতাসে ঘুরে বেড়ায়, যখন‌ই এরা বংশবিস্তার শুরু করে তখনই তাদের দেহ থেকে নির্গত হয় ঈর্ষৎ হলুদ রঙের এক প্রকার রস। ঐ রস রোগজীবাণুদের বংশবৃদ্ধিকে সম্পূর্ণরূপে প্রতিহত করে দেয়। অনেক ভেবেচিন্তে ফ্লেমিং ছত্রাকটির নামকরণ করলেন পেনিসিলিন নোটেটাম।

এবার ঐ ছত্রাকের রস জীবদেহে কীভাবে প্রতিক্রিয়া করে তা জানার জন্য ফ্লেমিং এই রস কয়েকটি খরগোশের দেহে প্রবেশ করালেন। দেখলেন, খরগোশের দেহে কোনো বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া হলো না। অতঃপর একদিন কাঁচের স্লাইডে রাখা রক্তের উপর‌ও প্রয়োগ করলেন। রক্তের সাথে কোনো খারাপ প্রতিক্রিয়া করালো না। ফ্লেমিং নিশ্চিত হলেন। ফ্লেমিং চিকিৎসা বিজ্ঞানী ছিলেন কিন্তু রসায়ন বিজ্ঞানী ছিলেন না। তাই তিনি মানবদেহে প্রবেশের উপযোগী ওষুধ হিসেবে পেনিসিলিনকে নিষ্কাশন করতে ব্যর্থ হলেন। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন চলেছে পুরোদমে। আর পাশ্চাত্যের হাসপাতালগুলো ভরে গেছে আহত সৈনিকে। এই সংকটময় মুহুর্তে ড‌ আর্নেস্ট বরিস চেইন পেনিসেলিন নোটেটাম থেকে ওষুধ রুপে পেনিসিলিন নিষ্কাশন করতে সক্ষম হন। কিন্তু  নিষ্কাশন পদ্ধতিটি অনেক ব্যয়বহুল ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট পেনিসিলিন উৎপাদনে সহায়তা করেন এবং রকফেলার ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে পেনিসিলিন তৈরির ব্যবস্থা করেন।

No comments

Powered by Blogger.