রাশিয়া কেন ইউক্রেন আক্রমণ করল?
রাশিয়া কেন ইউক্রেন আক্রমণ করল?
এখানে আমেরিকা কেন নাক গলাচ্ছে ?বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদ কি? এ যুদ্ধের কারণ বুঝতে হলে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা জরুরী।
রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল কারণ হলো দুটি ভিন্ন আদর্শগত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। রাশিয়া চলে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক মতাদর্শে, আর আমেরিকা চলে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক মতাদর্শে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বাকবিতন্ডা বা স্নায়ু যুদ্ধ শুরু। এখন দেখা যাক, সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদ কি?
সমাজতন্ত্র হলো সরকারের নিয়ন্ত্রানাধীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে বেসরকারি মালিকানা থাকে না। এককথায় দেশের সবকিছুর মালিক সরকার। কলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছুর মালিক সরকার। প্রত্যেকে তার নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করে এবং সুবিধা ভোগ করে।
সমাজতন্ত্রের সুবিধা হলো শিক্ষা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে জনগণ সমান সুযোগ লাভ করে। এক্ষেত্রে কোন অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকে না। পণ্যের দাম কখনো হুঁ হুঁ করে বাড়েনা। সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়।
তবে বর্তমানে অর্থনৈতিক সংস্কার করে, কিছু লোককে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। পত্র পত্রিকা, টিভি চ্যানেলগুলো সরকারী মালিকানাধীন বলে সরকারের গুনকীর্তন বেশি হয়। এক্ষেত্রে দেশের মানুষের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় না।
পুঁজিবাদ হলো সম্পূর্ণ বেসরকারি মালিকানাধীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠানের মালিক সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে। সম্পদ ভোগ করার ক্ষেত্রে কোন সীমা থাকে না। এসব দেশে ধনীগরিবের বৈষম্য অনেক বেশি হয়। তবে জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে তাদের জন্য বিভিন্ন দাবি পেশ করে। সরকার কিছু সেবা চালুর মাধ্যমে বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করে।
ইউক্রেন ছিল রাশিয়ার সুরে তাল-মেলানো সমাজতান্ত্রিক একটি দেশ। আমেরিকা ইউক্রেনকে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করে। দেশটির সরকার আমেরিকার সাথে বন্ধুত্ব করে। ইউক্রেনের জনগণকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়া তুলে। যুদ্ধ শুরু হলে আমেরিকা তথা ন্যাটো ইউক্রেনের পাশে থাকবে বলে অঙ্গীকার করে। ন্যাটো হলো আমেরিকা ও ইউরোপের সম্মিলিত বাহিনী। ইউক্রেন, ন্যাটোতে যোগ দিতে চায় যা সরাসরি রাশিয়ার জন্য হুমকি।নিঃসন্দেহে এটি রাশিয়ার জন্য খুব খারাপ একটি ব্যাপার। কারণ রাশিয়ার সীমান্ত ঘেষে আমেরিকার মতাদর্শে ইউক্রেন দেশটি গড়ে উঠলে রাশিয়ার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
নিজের দেশের সীমান্তের কাছে আমেরিকার পারমাণবিক অস্ত্র তাক করা থাকবে তা রাশিয়া কখনো মেনে নিবে না। রাশিয়ার সাথে পাল্লা দিতেই এই ন্যাটোর জন্ম হয়েছিল।
এ জন্যই রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলা চালায়। আমেরিকা জানে শক্তিশালী রাশিয়ার সাথে আমেরিকার যুদ্ধ শুরু হলে তা হবে খুবই ভয়ঙ্কর। কারণ দুই দেশে প্রচুর পরিমাণে পারমাণবিক বোমা, রাসায়নিক অস্ত্র মজুদ আছে। এ যুদ্ধ পার্শ্ববর্তী দেশে ছড়িয়ে পড়ে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হবে। তাই আমেরিকা ইউক্রেনকে উস্কে দিয়ে যুদ্ধ থেকে কেটে পড়ে। আমেরিকা ভেবেছিল রাশিয়া যুদ্ধে জড়াবে না। এমনিতেই রাশিয়া মেনে নেবে। আর এ যুদ্ধ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার মাধ্যমে এ যুদ্ধের সমাপ্তি হতে চলছে।
No comments