অধ্যায় -২ : মিশ্রণ
চলো রসায়ন বিজ্ঞান শিখি
অধ্যায় -২ : মিশ্রণ
মিশ্রণ
দৈনন্দিন আমরা নানা রকমের জিনিস ব্যবহার করি। এদের মধ্যে কিছু বিশুদ্ধ কিছু মিশ্রণ।মিশ্রণের মধ্যে কোনোটি দ্রবণ , কোনোটি সাসপেনসন আর কোনোটি কলয়েড। সমসত্ত্ব মিশ্রণে উপাদান গুলো আলাদা করা যায় না। মিশ্রণের উপাদানগুলো সহজে আলাদা করা গেলে তাকে অসমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে। দ্রব ও দ্রাবক মিশ্রণে যে জিনিসটি বেশি থাকে এবং দ্রবীভূত করে তাকে দ্রাবক বলে।আর যেটি কম পরিমাণে থাকে এবং দ্রবীভূত হয় তাই দ্রব । দ্রাবক + দ্রব = দ্রবণ
জলীয় দ্রবণ
পানি দ্রাবক হিসেবে থাকলে মিশ্রণটিকে জলীয় দ্রবণ বলে। দ্রাবক হিসেবে এসিটোন,স্পিরিট, ইথার ব্যবহৃত হয়।
দ্রবণের ঘনমাত্রা (পাতলা ও ঘন দ্রবণ) সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত দ্রবণ
একটি পাত্রে পানি ঢেলে তাতে ক্রমাগত লবণ মিশাতে থাকলে একসময় দেখা যাবে আর লবণ মেশানো যাচ্ছে না। অর্থাৎ পাত্রে যেটুকু পানি আছে তার লবণ দ্রবীভূত করার ক্ষমতা একটি সময় পর আর থাকে না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবক সর্বোচ্চ যে পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত করতে পারে সেই পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত থাকলে প্রাপ্ত দ্রবণকে সম্পৃক্ত দ্রবণ বলে।
পক্ষান্তরে কোনো দ্রবণে যদি সম্পৃক্ত দ্রবণের চেয়ে কম দ্রব দ্রবীভূত থাকে তাহলে সেই দ্রবণকে অসম্পৃক্ত দ্রবণ বলে। অসম্পৃক্ত দ্রবণে ক্রমাগত দ্রব যোগ করে সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরি করা হয়।
কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ১০০ গ্রাম দ্রাবক দিয়ে কোন দ্রবের সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরি করতে যতটুকু দ্রবের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ দ্রাবকে ঐ দ্রবের সম্পৃক্ত দ্রবণ বলে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১০০ গ্রাম পানি সর্বোচ্চ ৩৬ গ্রাম লবণকে দ্রবীভূত করতে পারে।
তরল - কঠিন দ্রবণ
যেসব দ্রবণে দ্রাবক হিসেবে তরল পদার্থ ও দ্রব হিসেবে কঠিন পদার্থ ব্যবহৃত হয় তাকে তরল- কঠিন পদার্থ বলে। তরল-তরল দ্রবণ দ্রাবক ও দ্রব উভয়ই তরল পদার্থ হলে ঐ দ্রবণকে তরল - তরল দ্রবণ বলা হয়। লেবু ও পানির মিশ্রণ একটি তরল-তরল দ্রবণ।
তরল- গ্যাস দ্রবণ
কোমল পানীয়তে দ্রাবক হিসেবে পানীয় ও দ্রব হিসেবে গ্যাস ব্যবহৃত হয়।এটি একটি তরল - গ্যাসীয় দ্রবণ। দ্রবণে তাপের প্রভাব তাপ প্রয়োগে দ্রবণের দ্রবণীয়তা বাড়ে।তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্রবণীয়তা কমে। পানিতে লবণের দ্রবণীয়তা তাপমাত্রা বাড়লে দ্রবণীয়তা বাড়ে।আবার সিরিয়াম সালফেট ও ক্যালসিয়াম সারফেট মিশ্রণের তাপমাত্রা তাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে যায়।
সর্বজনীন দ্রাবক
সর্বজনীন দ্রাবক হলো পানি। পানি অধিকাংশ দ্রবকে দ্রবীভূত করতে পারে। অসমসত্ত্ব মিশ্রণ প্রস্তুতি ও পৃথকীকরণ বাষ্প তরলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। মাটি ও পানির ঘোলাটে মিশ্রণ কিছু সময় রেখে দিলে উপাদানসমূহ আংশিক আলাদা হয়ে যায়। এই মিশ্রণটিকে সাসপেনসন বলে। কোন দ্রবণের অতি ক্ষুদ্র কণা যারা উপরের দিকে মিশ্রিত হয়ে ভাসমান থাকে কখনো তলানিতে জমা হয় না।এই মিশ্রণটি কলয়েড মিশ্রণ। দুধ একটি কলয়েড মিশ্রণ । দুধে পানি ও চর্বির কণাগুলো কলয়েড আকারে মিশ্রিত থাকে। কুয়াশা ও আরোসল স্প্রে কলয়েড মিশ্রণ। কলয়েড কণাগুলোর আকার ১-১০০০ ন্যানোমিটার হয়ে থাকে। কণাগুলোর আকার ১ মাইক্রোমিটার এর বেশি হলে দ্রবণটি সাসপেনশনের পরিণত হয়।
No comments